শাহিনুর আক্তার, বেলাব ( নরসিংদী) প্রতিনিধি: সুস্থ ও সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সব সময় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে যাচ্ছে সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। আলোচনা সভা, সেমিনারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নানা সমস্যার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন । এছাড়া বিভিন্ন সেবা, শিক্ষা এবং বিনোদনমূলক কাজও করে তারা, যা থেকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়।
শিক্ষার্থীদের জীবনে সামাজিক ও সেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বেলাবতে বিভিন্ন সংগঠকদের মতামত ও পরামর্শের কথা জানাচ্ছেন এলাকারবাসি।
সময়ের সঠিক ব্যবহার শেখায় এই সংগঠন গুলো।
শিক্ষার্থীরা উচ্চ-মাধ্যমিক শেষে এক গুচ্ছ স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্বপ্ন পূরণের এ যাত্রায় সমস্যার সূত্রপাত ঘটে তখন, যখন সে বুঝে উঠতে পারে না লেখাপড়ার পাশাপাশি বাকি সময়ে তার কী করা উচিৎ। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ কেউ ক্লাস-পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন, ল্যাব ইত্যাদির পর যে সময়টুকু থাকে সেটা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আড্ডা, ঘুরাঘুরি অথবা রুমে শুয়ে-বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশাল মিডিয়াতে ব্যয় করেন। ভয়ানক ব্যাপার হলো, কিছু শিক্ষার্থী আবার মাদকের মতো ভয়ানক নেশায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন! ফলে দিন শেষে স্বপ্ন পূরণের খাতায় হিসেব মেলাতে বেশ বেগ পোহাতে হয়।তবে এদের মাঝে আরেকটি শ্রেণি আছে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে যুক্ত হন।
যেমন কেউ চলো গড়ি বেলাব সংগঠনে, কেউ বা রক্তকণিকা সেচ্ছায় রক্তদান সংগঠনে আবার কেউ আছেন আলোর প্রতিক নামে সংগঠনে। এমনি আছে দক্ষিণধুর তরুণ যুব সংঘ, লেট ক্ষুদে নেওয়াজ মেমোরি ট্রাস। এছাড়াও আছে প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ প্রবাসী এক্য ফাউন্ডেশন নামে সংগঠন।
এসব সংগঠন একজন শিক্ষার্থীকে সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা ও সুশৃঙ্খল জীবন গঠন ও আমাদের সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিকশিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এলোমেলো জীবনযাপনের পরিবর্তে ক্যারিয়ার প্লানিংয়ে অনেক বেশি সতর্ক হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। সেই সঙ্গে নিয়মিত বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে ছাত্র অবস্থাতেই নেতৃত্বের গুণাবলি, গ্রুপ ভিত্তিক কাজের অভিজ্ঞতা, প্রেজেন্টেশন স্কিলের উন্নয়নসহ দক্ষ গ্রাজুয়েট হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
সংগঠনের বিভিন্ন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় হতাশা ও অবসাদ থেকেও অনেকাংশে মুক্ত থাকা যায়।
মেধা বিকাশে সংগঠনে যুক্ত হওয়া জরুরি।
এ সংগঠনগুলো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের ব্যক্তিত্ব ও মেধা বিকাশের সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। অর্জিত জ্ঞানকে বিকশিত করার একটা সুবর্ণ সুযোগ সংগঠনের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে।
সংগঠনগুলো ভিন্নধর্মী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে থাকে। কোনো সংগঠন নাচ, গান, আবৃত্তি বা অভিনয়ে দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিভিন্ন কর্মশালা আয়োজন করে থাকে। আবার অনেক সংগঠন আছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধির বাইরে গিয়ে দাতব্য অনেক কাজে সহযোগিতা ও সহযোগিতার মানসিকতা সৃষ্টিতে কাজ করে। যেমন- রক্ত দান, রোগ ব্যাধি প্রতিরোধে সতর্কতা বৃদ্ধি বা বিভিন্ন সময় আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে অর্থ সংগ্রহ ইত্যাদি। এছাড়াও যেখানে শিক্ষার্থীরা প্যাঠ্যসূচির বাইরে গিয়ে জীবনমুখী পড়াশোনা, রিসার্চ, বিতর্কসহ নানান রকম সংস্কৃতির চর্চা করতে পারে। এসব মুক্ত চিন্তা ও চর্চার সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া উচিত।