রোমান পথিক, রায়পুরা:
নরসিংদীর রায়পুরায় উপজেলার বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিতরে গত আড়াই মাসে তিনবার অগ্নিকান্ড ও এক চুরির পর টিউবওয়েলের ভিতরে বিষপ্রয়োগ করেছে দুর্বৃত্তরা। রবিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে।
পরিক্ষা চলাকালীন সময়ে বিষপ্রয়োগের পানি পান করার পর সামিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত শিক্ষার্থী সামিয়া দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সে চান্দেরকান্দি ইউপি বড়কান্দা গ্রামের মাসুদ মিয়ার মেয়ে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন আহত সামিয়ার চাচা খোকা মিয়া সহ পরিবারের লোকজন।
সামিয়ার চাচা খোকা মিয়া বলেন টিউবওয়েলে পানি পান করার পর আমার বাতিজি অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত তুলাতুলি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতেছে। যতটুকু শুনেছি সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু স্কুলের কোনো শিক্ষক আমার বাতিজিতে নিয়ে যায়নি বা তাৎক্ষণিক দেখতে যায়নি।
জানা যায়, বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রায়পুরা তথা নরসিংদীর মাঝে একাধিকবার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে। অথচ আজ কে বা কারা অত্র বিদ্যালয়ে বার বার এমন নিন্দনীয় ঘটনার সৃষ্টি দিচ্ছে তা আজও রহস্যময়। গত ৩ ও ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় অগ্নিসংযোগের পর রাতের আধারে স্কুলের দপ্তরি সহ স্থানীয় চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও দপ্তরি মামুনকে ছেড়ে দিয়ে বাকি তিনজনকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন রায়পুরা থানা পুলিশ। এরপর কোনো এক অদৃশ্য শক্তির কারনে অত্র স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারি কাউকে আজও আটক করা হয়নি। জিগ্যাসাবাদের জন্যে হাজতে প্রেরণ করেনি পুলিশ। কিন্তু কেন ওদের আটক করা হচ্ছে না এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে অনেক.?
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় চান্দেরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মেজবাহ্ উদ্দিন খন্দকার মিতুল এর উপস্থিতিতে সামাজিক শালিস হলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি বলেও জানা যায়।
গত আড়াই মাসে এই বিদ্যালয়ে চুরি, তিনবার অগ্নিসংযোগ এবং বিষক্রিয়ার ঘটনায় তীব্রনিন্দা জানান প্রধান শিক্ষক তাহমিনা সরকার। তিনি আরো বলেন এতগুলো ঘটনা ঘটেছে অথচ সমাজের লোকেরা এখনো পর্যন্ত এগিয়ে আসেনি। ওরা এবেপারে কোনো সহযোগিতা করেনি, কোনো সিদ্ধান্ত নেই না। এরা বলে যে এলাকাবাসী ভালো, আমরাই খারাপ। আমরা খারাপ হলে বলছি আমাদের বিদায় করে দিয়ে দেন। আমারও এখানে চাকরি করার ইচ্ছা নাই। এতো টেনশন নেওয়া আমার দরকার নাই। এছাড়াও বিষপ্রয়োগের ঘটনায় পানি পান করা সামিয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।
রায়পুরা থানার এসআই আলমগির সরকার জানান তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত আসামীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।