মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

আ. লীগ নেতা হত্যার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেন এমপি মোহন

প্রতিনিধির নাম / ৪১৮ বার
আপডেট : সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৩

নরসিংদীর শিবপুরের বহুল আলোচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশীদ খান হত্যা মামলার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে শিবপুরের এমপির দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এমপির সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশীদ খান হত্যা মামলার ছবি প্রকাশ হওয়ার পর শিবপুর জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। তবে হত্যা মামলার আসামিকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন কেনার বিষয় অস্বীকার করেছেন এমপি মোহন। তিনি জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন আমার ভাই। আমি স্টেডিয়াম এলাকায় যাওয়ার পর স্থানীয় নেতা-কর্মীরা আমাকে নিয়ে ছবি তুলেছেন। ওই সময় অভিযুক্ত শাকিল কিভাবে আমার পেছনে দাঁড়িয়ে গেছে, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি নজরে আসার পর সকল নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছি। উপজেলা চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ হত্যা মামলার ৪ নং এজাহার ভুক্ত আসামি শাকিল (৩৫)। চাঞ্চল্যকর এই মামলার প্রধান আসামি আরিফ ও কিলার মোবারকসহ আরও পাঁচ আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার বাদী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, আসামিদের প্রবাসে পালিয়ে থাকতেও সহায়তা করেছেন ওই এমপির ভাই জুনো। ঠিক এই আলোচনার মধ্যে আসামির সঙ্গে এমপির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর শিবপুর জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।

মামলার বাদী ও নিহত হারুন অর রশীদ খানের ছেলে আমীনুর রশীদ খান বলেন, এ ঘটনায় স্পষ্ট প্রমাণ হয় আমার বাবার খুনের সঙ্গে এমপি জড়িত। আদালতে চার্জশীট দাখিলের পূর্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন আরও তদন্ত করে এ বিষয়টি বিবেচনায় আনে, সে ব্যাপারেও অনুরোধ জানান মামলার বাদী।

তিনি আরও বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে যে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেই অস্ত্র মামলার আসামি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদের। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসাদকে সঙ্গে নিয়েও এমপি মোহন দলীয় সভা সমাবেশ অব্যাহত রেখেছেন।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী নিহতের ভাতিজা ফজলে রাব্বি খান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই শিবপুরের জনগণ বলে আসছে এই হত্যার সঙ্গে এমপি মোহন ও তার ভাই জুনো জড়িত। দীর্ঘদিন পরে হলেও এই খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ এই ছবি। শিবপুরের মানুষের দাবি এই হত্যা কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত খুনিরা যত প্রভাবশালীই হোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন তাদের মুখোশ উন্মোচিত করে।শিবপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) ফিরোজ তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই মামলায় শাকিলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে ৪ নম্বর আসামি। বর্তমানে সে জামিনে আছে। প্রধান আসামি আরিফসহ আরও পাঁচ আসামি দুবাই পালিয়ে যাওয়ায় তাদেরকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।’

নরসিংদী-৩ শিবপুর থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জহিরুল হক ভূঞা মোহন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ঘটনায় সত্যি আমি খুবই লজ্জিত। ভীরের মধ্যে কিভাবে সে আমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে তা লক্ষ্য করিনি। আকস্মিক কে আবার ছবি তুললো তা নিয়েও ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। বিষয়টি জানার পর আমি আমার লোকদের ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছি।’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন শিবপুরের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশীদ খান। পরে দেশে ও দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ৩১ মে ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ